স্বাস্থ্য ও সুস্থতা শব্দ দুটি একই সূত্রে গাঁথা । স্বাস্থ্য ভাল থাকার নামই সুস্থতা । স্বাস্থ্য এর সংজ্ঞা দেওয়া খুবই কঠিন । আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর কর্তৃক দেওয়া সংজ্ঞা নিম্নে উল্লেক করা হলো;
WHO কতৃক ১৯৪৮ ঘোষিত সংজ্ঞা অনুযায়ী,
” স্বাস্থ্য বলতে সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক, এবং সামাজিক কল্যাণবোধকে বোঝায়। শুধু রোগ বা দূর্বলতার অনুপস্থিতিকেই স্বাস্থ্য বলেনা। “
আবার, ১৯৮৬ সালে WHO স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সংজ্ঞা পরিবর্তন করে।
” স্বাস্থ্য দৈনন্দিন জীবনের একটি সম্পদ, এটা বেঁচে থাকার কোনো উদ্দেশ্য নয়। সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে স্বাস্থ্য একটি ইতিবাচক ধারনা যা শারীরিক ক্ষমতা অর্জনে উদ্ভদ্ধ করে। “
এর অর্থ হলো, একটি বৃহত্তর সমাজে একজন ব্যক্তির সক্রিয় অবস্থান অনেকাংশেই তার স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। একজন অসুস্থ মানুষের অনেক অর্থ-সম্পদ থাকলেও সমাজে তার মূল্য অনেক নিচে নেমে যায়। একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর জীবন খুবই প্রয়োজনীয়। সম্প্রতি গবেষকরা আরেকটা সংজ্ঞা দিয়েছেন-
” স্বাস্থ্য হচ্ছে নতুন নতুন বাধা এবং দূর্বলতার সাথে খাপ খাইয়ে সুস্থভাবে জীবনযাপন করা। “
তাদের এই ধরণের সংজ্ঞার কারণ হচ্ছে, গত কয়েক যুগ ধরে বিজ্ঞানের সুবাধে মানুষের মধ্যে রোগ-বালাই নিয়ে অনেক সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তাই এখন আর রোগ থেকে বেঁচে থাকাকেই স্বাস্থ্য বলা হয় না । সব ধরণের বাধা-বিপত্তিকে কাটিয়ে উঠে সুন্দরভাবে শরীর ও মন পরিচালনাকে স্বাস্থ্য বলে।
স্বাস্থ্যের প্রকারভেদ
মানুষের স্বাস্থ্য প্রধান দু’ধরনের – ক) শারীরিক স্বাস্থ্য খ) মানসিক স্বাস্থ্য
মানুষের এই দুধরনের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখার জন্য আর্থিক সচ্ছলতা, আধ্যাত্নিক নিরাময় ও আবেগ নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূণ ভুমিকা রাখে ।
ক) শারীরিক স্বাস্থ্য-
শারীরিক স্বাস্থ্য বলতে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে সঠিক সময় কাজ করাকে বুঝায় ।মানুষের জীবনে শারীরিক ভাবে সুস্থ্য থাকাটা খুবই জরুরী । শরীর ভাল না থাকলে কোন কাজ করা সম্ভব হয় না । জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে মানুষের সুস্থ্য থাকাটা জরুরী । মানুষের শারীরিক ভাবে সুস্থ্য থাকা এবং প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করার পিছনে রয়েছে রোগ মুক্ত থাকা, প্রতিদিন ব্যায়াম করা, পুষ্টিগুন সম্পন্ন খাবার খাওয়া এবং পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন হয় । এককথায় আপনাকে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি হচ্ছে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা এবং রোগব্যাধি হওয়ার আশংকা কমিয়ে দেয় ।
মানসিক স্বাস্থ্য –
মানসিক স্বাস্থ্য বলতে আমরা মানুষের আবেগিক, সামাজিক এবং মানসিক সুস্থতাকে বুঝায় । একজন মানুষের পরিপূর্ণ ও সক্রিয়ভাবে জীবন-যাপনের জন্য শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা একান্ত প্রয়োজন ।
শারীরিক সুস্থ্যতার তুলনায় মানসিক স্বাস্থ্যকে সংজ্ঞায়িত করা খুবই কঠিন । কারন ব্যক্তি বিশেষ এর মানসিক ভিন্ন থাকার কারনে মানসিক স্বাস্থ্যকে এক কথায় একই দৃষ্টি ভংগিতে সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয় । প্রত্যেক মানুষের আবেগ, আনন্দ, বেদনা, চিন্তা- ধারা ভিন্ন রয়েছে । তাই প্রত্যেক মানুষের মানসিক সুস্থতা তার নিজের অবস্থার উপর নির্ভর করে । একজন মানুষ তার অবস্থার উপর কতটুকু সন্তুষ্ট, তার উপর তার মানসিক সুস্থ্য নির্ভর করে । কোন মানুষ মানসিক ভাবে সুস্থ্য না হলে সেই কখনও শারীরিক ভাবে সুস্থ্য হতে পারবে না । মানুষ মানষিক চাপ ও মানসিক দূর্বলতার কাটিয়ে উঠতে পারলে সেই মানসিক সুস্থ্য থাকতে পারে । তাই মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থ্যতার উপর মানুষের সুস্থতা নির্ভর করে ।
এককথায় বলা যায় শারীরিক ও মানুষিকভাবে নীরোগ থাকা হচ্ছে সুস্থতা । রোগমুক্ত শরীর ও চিন্তামুক্ত মন ।
সুস্থ থাকার কিছু উপায়
মানুষ অসুস্থ হতে চায় না । অসুস্থতা মানেই হচ্ছে কষ্টে থাকা, ঝামেলা থাকা, খরচের পেরেশানিতে থাকা । অসুস্থতা শুধু ব্যক্তির কাছে খারাপ লাগে, তাই নয় বরং এর জন্য সময় এবং অর্থ সবই অপচয় হয় ।সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় । ব্যক্তির কোন ধরনের কাজ করা সম্ভব হয় না । বরং অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখা শুনা করার জন্য আরো অনেক অতিরিক্ত লোক জনের প্রয়োজন হয় । অসুস্থ ব্যক্তির জন্য ওষুধ ও চিকিৎসা বাবত অনেক অর্থ অপচয় করতে হয় ।
তাই আমাদেরকে অসুস্থ হওয়া থেকে বেচেঁ থাকার চেষ্ঠা করতে হবে । একটা কথা আছে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করানো চেয়ে অসুখ যেন আপনাকে আক্রমন করতে না পারে আমাদেরকে সেই চেষ্টা সর্বক্ষণ করতে হবে । আমরা সুস্থ থাকার জন্য বিশেষ করে পাঁচটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে পারি, তাহলে অতিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো ।
১. উত্তম স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন –
আমরা প্রতিনিয়ত যে কাজগুলো করে থাকি বা করতে বাধ্য হই সেইগুলোকে স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী মেনে চললে, আমরা অনেকাংশে সু্স্থ্য থাকতে পারি । আমরা প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগে আক্রান্ত হই এবং বিভিন্ন কারনে আমরা অসুস্থ হই। এই থেকে বেঁচে থাকার উপায় হচ্ছে সঠিক নিয়মে হাত ধোয়া । সর্দি, কাশি হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে হাতে জীবানু থাকা অবস্থায় নাক, চোখ ও মুখে হাত দিয়ে স্পর্শ করা । এই ধরনের জীবানু থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে নিয়ম অনুযায়ী সাবান বা জীবানুনাশক দিয়ে হাত ধোয়া । শুধু মাত্র সঠিক নিয়মে হাত ধৌত করলে নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়া, কলেরার মত মহামারী থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব। এমনকি করোনা ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস মত মারাত্নক মহামারী থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব । শিশুদেরকে অনেক অসুখ থেকে রক্ষা করা সম্ভব শুধু মাত্র শিশুদের হাত ধোয়ার অভ্যস্ত গঠনের মাধ্যমে ।
বিশেষভাবে নির্দিষ্ট কিছু সময় অবশ্যই হাত ধৌত করতে হবে, যাতে আপনি নিজেকে এবং অন্যদেরকে সুস্থ রাখতে পারেন । নিচের সময়গুলোতে অবশ্যই সাবান বা জীবানুনাশক দিয়ে হাত ধোত করতে হবে ।
- পায়খানা ব্যবহার করার পর
- বাচ্চাদের ডায়পার বদলানোর বা পায়খানা করানো পর
- কাটা জায়গা বা ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে ওষুধ লাগানোর আগে এবং পরে ।
- খাবার প্রস্তুত করার পূবে, তা পরিবেশনের পূর্বে এবং খাওয়ার আগে ।
- হাচিঁ, কাশি ও নাক ঝাড়ার পরে ।
- কোন পশু বা পাখির গায়ে হাত দেওয়ার পর অথবা তাদের মল- মূত্র পরিষ্কার করার পরে ।
- বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা পরিষ্কার করার পরে ।
হাত ধোয়া যেনতেন ভাবে করা উচিত নয় । হাত ধোয়ার পদ্ধতি রয়েছে –
- পরিষ্কার পানিতে হাত ভেজান এবং সাবান লাগান
- দুই হাত ঘষে ফেনা তৈরি করুন এবং সেই সংগে অবশ্যই নখ, বৃদ্ধাঙ্গুল. হাতের পিছন দিক এবং আঙুলের মাঝের জায়গা পরিষ্কার করুন ।
- কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ঘুষুন
- পরিষ্কার পানি দিয়ে ভাল কর হাত ধোন ।
- পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হাত মুছুন ।
২. বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন-
পৃথিবীর অনেক দেশে পানি বা বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করা কঠিন । আবার কিছু দেশে সহজে পানি পাওয়া যায় । কিন্তু পানি পেলে পানি বিশুদ্ধ কিনা সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়। কোন দেশে ব্ন্যা, ঝড়, বৃষ্টি, পানি সরবরাহের পাইব নষ্ট হওয়ার কারনে কোন কোন সময় বিশুদ্ধ পানি পাওয়া খুবই দুষ্কর হয়ে ওঠে । পানির উৎস যদি নিরাপদ না হয় এবং সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না হয় তাহলে পানি দূষিত হতে পারে । এই দূষিত পানি পান করে বা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার কারনে টাইফয়েড, ডায়েরিয়া, কলেরা, হেপাটাইটিস সহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ হতে পারে । পৃথিরী যতগুলো রোগ হয় তার জন্য দূষিত পানি ৯০ % দায়ী ।
বিশুদ্ধ পানির জন্য নিম্নের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত –
- খাওয়ার পানি, অযুর পানি, গোসলের পানি, রান্নার পানি, থানা বাসন, কাপ[ড় ধোয়ার পানি নিরাপদ উৎস থেকে আসে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে হবে । পানি পরিশোধিত অথবা কোন কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত পানি কিনা, নিশ্চিত হতে হবে । এছাড়া গভীর নলকূপের পানি বিশুদ্ধ হয় । নলকূপের পানি আর্সেনিক মুক্ত হতে হবে ।
- কোনভাবে পানি দূষিত হলে পানি ফুটিয়ে নিন এবং প্রয়োজনীয় ওষধ ব্যবহার করুন ।
- ওষধ বা পানি পরিশোধক ট্যাবলেট ব্যবহার করার সময় মান সম্পন্ন কোম্পানীর ওষধ ব্যবহার করুন
- বর্তমানে পানি পরিশোধনের জন্য ফিল্টার ব্যবহার করা হয় , ফিল্টারটি যেন মান সম্পন্ন হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
- কোন কোন ক্ষেত্রে পানি পরিশোধনের কোন ওষধ পাওয়া না গেলে ব্লিচিং পাউটার ব্যবহার করুন । ১ লিটার পানিতে দু-ফোঁটা ব্লিচিং ব্যবহার করুন ।
- বিশুদ্ধ পানি ঢেকে রাখুন, যেন পানি পুনরায় দুষিত না হয়
- পানি রাখার পাত্রটি পরিষ্কার হতে হবে ।
- পরিষ্কার হাতে পানির পাত্র ধরুন । পানিতে হাত বা আঙ্গুল ডোবাবেন না ।
৩. খাবারের প্রতি খেয়াল রাখুন –
পুষ্টিকর খাবার ছাড়া ভালো স্বাস্থ্য পাওয়া সম্ভব নয় । পুষ্টি লাভ করতে হয় পুষ্টিকর ও সুষম খাবার থেকে । আপনার খাবারে প্রতিদিন ফলমূল ও শাকসবজি থাকতে হবে । খাবারের মধ্যে বৈচিত্র থাকতে হবে । আপনার খাদ্য তালিকায় চর্বি, শর্করা এবং লবন থাকতে হবে কিন্তু তা যেন অতিরিক্ত না হয় । আপনি লাল আটা ও লাল আশযু্ক্ত চাল খেতে হবে । প্রোটিন পাওয়ার জন্য কম চর্বিযুক্ত ও কম পরিমান গোশত খান । প্রচুর পরিমান আশঁযুক্ত খাবার খান। সপ্তাহে অধিকাংশ সময় মাছ খান । উদ্ভিদ থেকে প্রস্ততকৃত প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খান ।
অধিক পরিমান শর্করা এবং চর্বি জাতীয় খাবার খেলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে । সব সময় ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে । কোমল পানীয় পান না করে বিশুদ্ধ পানি পান করুন । বাজারের তৈরি খাবার খাবেন না, বিশেষ করে রাস্তার পাশের খাবার, বার্গার, আইসক্রিম, গিরিল, কেক ইত্যাদি খাওয়া পরিহান করুন ।
খাবারে যদি লবন বা সোডিয়াম বেশি থাকে তাহলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে । তাই সর্তক থাকতে হবে । বিট লবন বেশি খাবেন না । শুকনা মরিচ পরিহার করুন । সবচেয়ে বড় কথা যে খাবার খান তা আপনার শরীরে জন কতটুকু উপযুক্ত সেটা আপনাকে বিবেচনা করে খেতে হবে ।
আপনার খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার পেটে তিন ভাগের এক ভাগ খাবর খান, এক ভাগ পানি খান এবং আপনি খালি রাখেন । এছাড়া বর্তমানে খাবারে বিভিন্ন ধরনের পয়জয়িং বিষয়টি বিবেচেনায় রাখতে হবে ।
খাবারেরে ক্ষেত্রে নিম্নে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে :
- শাকসবজিদে কীটনাশক ও সার দেওয়া থাকে, তাই শাক-সবজি খাবার বা রান্নার করার পুর্বে কিছু সময় পানিতে ভিজে রাখুন এবং ভাল করে ধুয়ে নিন ।
- প্রতিবার খাবার পুর্বে খাবারের সাথে সম্পর্কিত দা, কাটার, বাসনপত্র ইত্যদি ভাল ভাবে পরিষ্কার করে নিন ।
- খাবার ঢাকনা দিয়ে রাখুন , খাবার যেন পুনরায় দূষিত না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
- কাঁচা ডিম, মাছ এবং মাংস থেকে রান্না করা খাবার দূরে রাখুন ।
- সঠিক তাপমাত্রা খাবার রান্না করুন । খাবার নষ্ট হওয়ার পূর্বে নিদিষ্ট তাপমাত্রা ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন ।
- বাসি খাবার কখনও খাবেন না ।
৪. শারীরিক পরিশ্রম করুন ;
আপনার বয়স যা-ই হোক না কেন, আপনাকে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করা প্রয়োজন । বর্তমানে মানুষ যথেষ্ট ব্যায়াম করে না । কেহু ব্যায়াম করলেও তা পর্যাপ্ত হয় না । আপনি যদি নিয়ম মাপিক ব্যায়াম না করতে পারেন, তার পরিববর্তে আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিশ্রম করেন তাও আপনাকে সুস্থ্য রাখতে যথেষ্ট সাহায্য করবে । আপনি যদি একজন মুসলিম হন এবং নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করেন, তাও আপনার জন্য যথেষ্ট ব্যায়াম হিসাবে গন্য হবে । পরিশ্রম বা নিয়মমাপিক ব্যায়াম করার কারনে আপনি নিচে উপকার গুলো পেতে পারেন –
- আপনি নিজে নিজে সচল থাকতে পারবেন
- ভাল ঘুম হবে
- মজবুধ হাড় ও শক্তিশালী পেশি গড়ে উঠবে
- ওজন সঠিক মাত্রায় থাকার সম্ভবনা রয়েছে
- মানসিক বিষন্নতা কমবে
- অকাল মৃত্যু সম্ভবনা কমবে
আপনি যদি শারীরিক পরিশ্রম না করেন তাহলে আপনার নিচের সমস্যাগুলো হতে পারে –
- উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে
- হার্টের রোগ হতে পারে
- ডায়াবেটিস হতে পারে
- কোলেস্টেরাল বৃদ্ধি পেতে পারে
- স্ট্রোকের ঝুকিঁ থাকবে ।
শরীরচর্চা করার ক্ষেত্রে কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত, তা নির্ভর করে আপনার বয়স, স্বাস্থ্যের ধরন এবং খাওয়ার উপর । এক্ষেত্রে আপনাকে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে আপনার জন্য কোন ধরনের ব্যায়াম উপযুক্ত তা আপনি নির্ধারন করে নিন । কিছু বিশেষজ্ঞের মতে কিশোর- কিশোরিদের প্রতিদিন হালকা এবং ভারী মিলিয়ে ৬০ মিনিট ব্যায়াম বা খেলাধুলা করা উচিত । বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাতে ১৫০ মিনিট হালকা ব্যায়াম এবং ৭৫ মিনিট ভারী ব্যায়াম করা উচিত ।
আপনি যে ধরনের ব্যায়াম করতে আনন্দবোধ করেন সেই ধরনের ব্যায়াম বেছে নেওয়া উচিত । আপনি ব্যায়াম হিসাবে ফুটবল খেলা, বাস্কেট বল, টেনিস, জোরে হাঁটা, সাইকেল চালানো, বাগান করা, সাঁতার কাটা, কাঠ কাটা, নৈাকা চালানো, জগিং করা সহ বিভিন্ন ব্যায়াম করুন ।
কোনটি হালকা ব্যায়াম এবং কোনটি ভারী ব্যায়াম তা বুঝার উপায় হচ্ছে, হালকা ব্যায়াম হচ্ছে ব্যায়ামের সময় আপনার ঘাম হবে আর ভারী ব্যায়ামের সময় আপনি কথা বলতে পারবেন না ।
৫. পর্যাপ্ত ঘুমান –
মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে ঘুমানো । কিন্তু কে কতটুকু ঘমাতে হবে তা নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষে শারীরিক চাহিদার উপর। নবজাতক শিশু প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমায় । ১ থেকে ৩ বছরের শিশুরা ১৪ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমায় । ৩ থেকে ৪ বছরের শিশুরা ১১ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমায় । কিশোর কিশোরীরা ৯ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমায় । প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তিগন ৭থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমায় ।
পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমাতে পারলে তার একটা বিরাট উপকার রয়েছে । নিম্নে পর্যাপ্ত ঘুমানো উপকারীতা উল্লেখ করা হলো –
- যে কোন তথ্য মনে রাখা বা মুখস্ত করা সহজ হয়
- শিশু এবং কিশোরদের বৃদ্ধি ও বিকাশ হয়
- হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে
- হার্ট ভাল থাকে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
- বিপাকক্রিয়া ও ওজন ঠিক থাকে
পর্যাপ্ত পরিমান না ঘুমাতে না পারলে আপনার শারীরিক অনেকগুলো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে । বিশেষ করে বিষন্নতা, স্থুলতা, হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস এবং বিভিন্ন ধরনের অসুখ সৃষ্টি হতে পারে । এই সকল সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে । আবার অনেকে ঘুমাতে চায় কিন্তু তার ঘুম হয় না, এই ক্ষেত্রে আপনি নিচের নিয়মগুলো মেনে চলতে পারেন –
- প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময় ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করা
- বিছানায় শোয়ার পর মোবাইল, টেলিভিশন ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না।
- বিছানাকে আপনার শারীরিক উপযোগী করুন।
- শোয়ার রুম যেন নিরিবিলি, অন্ধকার ও আরামদায়ক হয় ।
- শোয়ার রুমের তাপমাত্রা যেন আপনার শরীরের সাথে মানানসই হয়।
- ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে চা, কপি, মদ এবং ভারী খাবার খাবেন না ।
- ঘুমানোর পূর্বে আপনি হালকা ব্যায়াম করতে পারেন ।
thanks you