হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয়?

হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি, কারণ আমাদের হৃদস্পন্দন আমাদের স্বাস্থ্যের মূল সূচক। দ্রুত বা অনিয়ন্ত্রিত হার্টবিট সাধারণত শরীরের কোনোরকম সমস্যা বা স্ট্রেসের সংকেত হতে পারে। অনেক সময় সাধারণ পরিশ্রম বা মানসিক চাপের কারণে হার্টবিট বেড়ে যায়, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বা অতিরিক্ত দ্রুত হার্টবিট হলে তা গুরুতর অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে। এই নিবন্ধে, আমরা হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয় বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করবো, যা আপনাকে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।


হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয়: প্রথম পদক্ষেপ

হার্টবিট বেড়ে গেলে প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে এর কারণগুলো কী কী হতে পারে। দ্রুত হার্টবিটের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো স্ট্রেস, উদ্বেগ, অতিরিক্ত কফি বা চা পান, উচ্চ রক্তচাপ, বা শারীরিক পরিশ্রম। এছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা হৃদরোগের সমস্যাও হার্টবিট দ্রুত করার কারণ হতে পারে।

প্রথম ধাপে করণীয়:

  • শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং গভীর শ্বাস নিন।

  • খুব দ্রুত চলাফেরা বা হঠাৎ দাঁড়ানোর পরে বসে পড়ুন।

  • অতিরিক্ত ক্যাফেইন, এলকোহল ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

  • নিয়মিত আপনার হার্টবিট মাপুন এবং পরিবর্তন লক্ষ্য করুন।

আরও তথ্যের জন্য American Heart Association-এর হার্টবিট গাইড দেখতে পারেন।


দ্রুত হার্টবিটের কারণসমূহ এবং করণীয়

হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে:

  • স্ট্রেস ও উদ্বেগ: মানসিক চাপ হৃদয়ের স্পন্দন দ্রুত করতে পারে।

  • অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম: অনুশীলন বা কাজের সময় হার্টবিট বৃদ্ধি পায়।

  • অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা: ধূমপান, মদ্যপান ও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস।

  • হৃদরোগ ও অন্যান্য রোগ: যেমন উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড সমস্যা, বা হৃদস্পন্দন ব্যাধি।

করনীয়:

  • নিয়মিত বিশ্রাম নিন এবং স্ট্রেস কমানোর পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

  • শারীরিক পরিশ্রমের পরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন।

  • হার্ট সংক্রান্ত কোনও গুরুতর উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয় জীবনশৈলী পরিবর্তন

জীবনশৈলী পরিবর্তন হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী।

হার্টবিট নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্যাভ্যাস

  • বেশি পরিমাণে তাজা ফল ও সবজি খান।

  • স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স ফ্যাট পরিহার করুন।

  • লবণের পরিমাণ কমিয়ে দিন।

  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার (যেমন মাছ) গ্রহণ করুন।

নিয়মিত ব্যায়াম ও বিশ্রামের গুরুত্ব

  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করুন।

  • যোগব্যায়াম ও ধ্যান করে স্ট্রেস কমান।

  • পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।

অন্য একটি জরুরি দিক হলো WHO-এর হৃদরোগ প্রতিরোধ তথ্য জানা।


হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয় ও চিকিৎসা পরামর্শ

কখন হার্টবিট বেড়ে গেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত?

  • যদি হার্টবিট হঠাৎ এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে দ্রুত হয়ে যায়।

  • বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বা বমি বমি ভাবের সঙ্গে হার্টবিট বেড়ে গেলে।

  • নিয়মিত মাথা ঘোরা বা অবচেতন হওয়ার সমস্যা দেখা দিলে।

ডাক্তার সাধারণত হার্টের ইসিজি পরীক্ষা এবং অন্যান্য নির্ণয় পদ্ধতি করবেন। প্রয়োজনে ওষুধ বা চিকিৎসা পরামর্শ দেবেন।


হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয় প্রাকৃতিক উপায়

স্ট্রেস কমানো ও ঘরোয়া প্রতিকার হার্টবিট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

  • গভীর শ্বাস নেওয়া: ধীরে ধীরে এবং গভীর শ্বাস নেওয়া হৃদস্পন্দন কমাতে সাহায্য করে।

  • তুলসী বা পুদিনা পাতার চা: হার্ট রিলাক্স করতে সাহায্য করে।

  • ঠান্ডা পানির স্নান বা হাত মুখ ধোয়া: হার্টবিট কমাতে সহায়ক।

  • স্ট্রেস কমানোর জন্য মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম।


উপসংহার

হার্টবিট বেড়ে গেলে করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জীবন রক্ষা করতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে দ্রুত হার্টবিট নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। সব সময় নিজের শরীরের সংকেত মনোযোগ দিয়ে শোনার অভ্যাস করুন এবং দ্রুতগতিতে হার্টবিট বৃদ্ধি পেলে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top