ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়-
ধরনসমূহ
এন্ডোক্রাইন সিস্টেম
কিডনির ক্ষতি
রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থায় সমস্যা
চর্মতন্ত্র (ইনটেগুমেন্টারি সিস্টেম)
মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র (সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম)
প্রজনন তন্ত্র
ডায়াবেটিস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন হৃদয়, কিডনি, চোখ, পা এবং পায়ের পাতায় প্রভাব ফেলতে পারে। এই রোগ দীর্ঘদিন থাকলে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত বেশি থাকলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।
“ডায়াবেটিস” শব্দটি শুনলে সাধারণত সবার আগে মাথায় আসে রক্তে উচ্চ শর্করার কথা।
রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা অনেক সময় অবহেলিত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে রক্তে শর্করার ভারসাম্যহীনতা ডায়াবেটিসে পরিণত হতে পারে।
ডায়াবেটিস শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিন ব্যবহারের সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। ইনসুলিন হলো একটি হরমোন, যা শরীরকে গ্লুকোজ (চিনি) থেকে শক্তি তৈরি করতে সাহায্য করে।
নিচে ডায়াবেটিস হলে শরীরে যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে, তা উল্লেখ করা হলো।
ডায়াবেটিস যদি দ্রুত সনাক্ত করা যায়, তবে এটি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে চিকিৎসা না করলে ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় বা বিভিন্ন জটিলতার কারণ হতে পারে, যেমন:
হৃদরোগ
স্ট্রোক
কিডনির ক্ষতি
স্নায়ু ক্ষতি
সাধারণত আপনি খাওয়া-দাওয়ার পর, শরীর খাবারে থাকা চিনি ভেঙে ফেলে এবং সেই চিনি ব্যবহার করে কোষে শক্তি উৎপাদন করে।
এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে আপনার অগ্ন্যাশয় (pancreas) একটি হরমোন তৈরি করে, যার নাম ইনসুলিন। ইনসুলিনই রক্ত থেকে চিনি নিয়ে কোষে পাঠিয়ে দেয় যাতে তা শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কিন্তু ডায়াবেটিস থাকলে অগ্ন্যাশয় হয় খুব অল্প পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করে, কিংবা একেবারেই তৈরি করে না। এমন অবস্থায় শরীর ইনসুলিনকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না।
ফলে রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা বেড়ে যায়, অথচ শরীরের কোষগুলো প্রয়োজনীয় শক্তি থেকে বঞ্চিত থাকে। এর ফলে শরীরের প্রতিটি প্রধান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় তার উপর ভিত্তি করে ডায়াবেটিসের ধরনসমূহ:
আপনার শরীরে ডায়াবেটিস কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কোন ধরণের ডায়াবেটিসে ভুগছেন তার ওপর। ডায়াবেটিস প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে: টাইপ ১ এবং টাইপ ২।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস – যাকে শিশুদের ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন-নির্ভর ডায়াবেটিসও বলা হয় – এটি একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থার (ইমিউন সিস্টেম) সমস্যা। এই ক্ষেত্রে শরীরের ইমিউন সিস্টেম অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন তৈরি করে এমন কোষগুলোকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে ফেলে। ফলে শরীর আর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। টাইপ ১ ডায়াবেটিস হলে বেঁচে থাকার জন্য ইনসুলিন নিতে হয়। বেশিরভাগ মানুষ শৈশব বা কৈশোরে এই রোগের নির্ণয় পায়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস ইনসুলিন প্রতিরোধের সঙ্গে সম্পর্কিত। আগে এটি সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে দেখা যেত, কিন্তু এখন তরুণরাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর পেছনে খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরন ও ব্যায়ামের অভ্যাসের ভূমিকা রয়েছে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিনকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ফলে রক্তে থাকা চিনি কোষে যেতে পারে না এবং শক্তিতে রূপান্তরিত হয় না। একপর্যায়ে ইনসুলিন ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।
প্রিডায়াবেটিস ধরা পড়ার প্রাথমিক অবস্থায়ই যদি সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং রক্তে শর্করার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়, তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। সঠিক জীবনযাপন ও অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে এটি রিমিশন বা সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তা ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক ডায়েট এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং শিশুর জন্মের পর সাধারণত এটি সেরে যায়।
তবে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থায় জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায় এবং মা ও শিশুর ভবিষ্যতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি করে।
এন্ডোক্রাইন, বর্জ্য নিষ্কাশন (এক্সক্রেটরি), এবং পরিপাকতন্ত্র (ডাইজেস্টিভ) ব্যবস্থার ওপর ডায়াবেটিসের প্রভাব বা ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় তা উল্লেখ করা হলো-
যদি অগ্ন্যাশয় পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না করে বা শরীর ইনসুলিন ব্যবহার করতে না পারে, তাহলে শরীর শক্তি উৎপাদনের জন্য চর্বিকে ভেঙে ব্যবহার করে। এতে শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিক যেমন অ্যাসিড এবং কিটোন বডি তৈরি হয়, যা ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস (Diabetic Ketoacidosis) নামক গুরুতর অবস্থা তৈরি করতে পারে।
ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস হলো ডায়াবেটিসের একটি মারাত্মক জটিলতা। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
অত্যধিক পিপাসা
অতিরিক্ত প্রস্রাব
ক্লান্তিভাব
এ সময় আপনার নিঃশ্বাসে মিষ্টি ঘ্রাণ থাকতে পারে, কারণ রক্তে কিটোনের মাত্রা বেড়ে যায়। রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ এবং প্রস্রাবে অতিরিক্ত কিটোন থাকলে এই অবস্থা নিশ্চিত করা যায়। চিকিৎসা না করলে এটি অজ্ঞান হওয়া বা এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ডায়াবেটিক হাইপারগ্লাইসেমিক হাইপারসমোলার সিনড্রোম (HHS) টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ঘটে। এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে, কিন্তু কিটোন থাকে না।
এই অবস্থায় আপনি পানিশূন্যতায় (ডিহাইড্রেশন) ভুগতে পারেন এবং অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। HHS সাধারণত এমন রোগীদের মধ্যে দেখা যায়, যাদের ডায়াবেটিস এখনও নির্ণয় হয়নি বা যারা তাদের ডায়াবেটিস সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক বা সংক্রমণের কারণেও হতে পারে।
রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের কারণে গ্যাস্ট্রোপারেসিস হতে পারে। এতে পাকস্থলী পুরোপুরি খালি হতে সময় নেয়। এই বিলম্বের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় বা এর ফলে আপনি নিচের সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে পারেন:
বমিভাব (নসিয়া)
বমি
পেট ফাঁপা
বুকজ্বালা (হার্টবার্ন)
কিডনির ক্ষতি
ডায়াবেটিস আপনার কিডনির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে এবং রক্ত থেকে বর্জ্য ছেঁকে ফেলার ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে। যদি আপনার প্রস্রাবে মাইক্রোঅ্যালবুমিনিউরিয়া (microalbuminuria) বা অতিরিক্ত প্রোটিন পাওয়া যায়, তবে এটি ইঙ্গিত দিতে পারে যে আপনার কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না।
ডায়াবেটিস-সম্পর্কিত কিডনির সমস্যাকে বলা হয় ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি (diabetic nephropathy)। এই অবস্থার লক্ষণ সাধারণত শেষের দিকে গিয়ে প্রকাশ পায়।
আপনার ডায়াবেটিস থাকলে, আপনার চিকিৎসক কিডনি নষ্ট হওয়ার আগেই তা শনাক্ত করতে ও অপূরণীয় ক্ষতি বা কিডনি ফেইলিউর প্রতিরোধ করতে নিয়মিত নেফ্রোপ্যাথি পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন।
রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা (Circulatory System)
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় তার মধ্যে ডায়াবেটিস আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়, যা হৃদযন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
যখন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকে, তখন এটি রক্তনালির দেয়ালে চর্বিযুক্ত পদার্থ (ফ্যাটি ডিপোজিট) জমা হতে সাহায্য করে। সময়ের সাথে সাথে এসব জমাটবদ্ধ পদার্থ (প্লাক) রক্তপ্রবাহ ব্যাহত করে এবং অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (atherosclerosis), অর্থাৎ রক্তনালি সরু হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজেস (NIDDK) অনুযায়ী, ডায়াবেটিস হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ করে দেয়। তাই শুধু রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাই নয়, বরং সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে।
যদি আপনি ধূমপান করেন এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকেন, তবে ধূমপান ছাড়ার কথা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত। ধূমপান হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এবং রক্তপ্রবাহ ব্যাহত করতে পারে। এই অভ্যাস ছাড়তে চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
রক্তপ্রবাহের অভাব একপর্যায়ে হাত ও পায়ে প্রভাব ফেলতে পারে এবং হাঁটার সময় ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে — যাকে বলা হয় ইন্টারমিটেন্ট ক্লডিকেশন (intermittent claudication)।
পায়ের রক্তনালি সরু হয়ে গেলে ঠান্ডা অনুভব, বা তাপমাত্রা না টের পাওয়ার মতো অনুভূতি দেখা দিতে পারে। একে বলে পারিফেরাল নিউরোপ্যাথি (Peripheral Neuropathy), এটি ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির একটি ধরন যা হাত-পা অবশ করে দেয়। এটি বিপজ্জনক, কারণ এতে আপনি চোট বা সংক্রমণ টের নাও পেতে পারেন।
ডায়াবেটিস পায়ে আঘাত, সংক্রমণ বা ঘা (আলসার) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। রক্তপ্রবাহের অভাব ও স্নায়ুর ক্ষতির কারণে পা বা পা কেটে ফেলতে হতে পারে (অ্যাম্পুটেশন)।
তাই ডায়াবেটিস থাকলে পায়ের যত্ন নেওয়া এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
ত্বক বা ইনটেগুমেন্টারি সিস্টেমে ডায়াবেটিসের প্রভাব
ডায়াবেটিস আপনার ত্বককেও প্রভাবিত করতে পারে — এটি আপনার শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ। রক্তে উচ্চ শর্করার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) দেখা দেয়, যার ফলে বিশেষ করে পায়ের ত্বক শুষ্ক ও ফাটতে পারে।
স্নান বা সাঁতার কাটার পর পা ভালোভাবে শুকানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি পেট্রোলিয়াম জেলি বা মৃদু ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন, তবে ত্বক যেন অতিরিক্ত স্যাঁতসেঁতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আর্দ্র ও উষ্ণ ত্বকের ভাঁজে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। সাধারণত এই সংক্রমণ দেখা যায়:
আঙুল ও আঙুলের ফাঁকে
কুঁচকি (groin)
বগলে
ঠোঁটের কোনায়
লক্ষণগুলোর মধ্যে থাকতে পারে:
ত্বকে লালচে বা রঙের পরিবর্তন
ফুসকুড়ি বা ফোস্কা
চুলকানি
পায়ের নিচের চাপযুক্ত স্থানে সহজেই কালাস (callus) গঠিত হয়, যা পরে সংক্রমিত হয়ে আলসার (ঘা) হয়ে যেতে পারে। যদি পায়ে কোনো আলসার হয়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি — কারণ দেরি করলে পা কেটে ফেলতে হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা আরও কিছু ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন, যেমন:
ফোড়া (boils)
ফলিকিউলাইটিস (চুলের গোঁড়ার সংক্রমণ)
স্টাই (চোখের পাতায় ছোট ফোড়া)
নখের সংক্রমণ
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিচের তিনটি চর্মরোগও সৃষ্টি করতে পারে:
ইরাপটিভ জ্যানথোমাটোসিস (Eruptive xanthomatosis):
ত্বকে হলুদ রঙের শক্ত গাঁট দেখা যায় যার চারপাশ লাল — এটি অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের কারণে হয়।ডিজিটাল স্ক্লেরোসিস (Digital sclerosis):
ত্বক মোটা হয়ে যায়, সাধারণত হাত বা পায়ে।ডায়াবেটিক ডার্মোপ্যাথি (Diabetic dermopathy):
ত্বকে বাদামি দাগ পড়ে। এটি ভয়ের কিছু নয় এবং সাধারণত চিকিৎসার দরকার হয় না।
এই ত্বকের সমস্যাগুলো সাধারণত রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এলে সেরে যায়।
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Central Nervous System)
ডায়াবেটিসের কারণে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বা স্নায়ু ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে তাপ, ঠান্ডা ও ব্যথা অনুভব করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এতে আপনি সহজেই আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারেন।
এই ধরনের আঘাত আপনি হয়তো টেরই পাবেন না, ফলে তা থেকে সংক্রমণ বা জটিল সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস চোখের রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নামক সমস্যা তৈরি করতে পারে। এতে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে এবং অন্ধত্ব পর্যন্ত হতে পারে। চোখের সমস্যা শুরুর দিকের লক্ষণগুলো খুব হালকা হতে পারে, তাই নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি।
প্রজনন ব্যবস্থা (Reproductive System)
গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হতে পারে, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। গর্ভাবস্থায় দুটি উচ্চ রক্তচাপ-সম্পর্কিত রোগের প্রতি সতর্ক থাকা জরুরি:
প্রি-এক্ল্যামপসিয়া (Preeclampsia)
এক্ল্যামপসিয়া (Eclampsia)
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং বাচ্চা জন্মের পর রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এর লক্ষণ অন্যান্য ডায়াবেটিসের মতোই, তবে এর সঙ্গে যোনি ও মূত্রথলির বারবার সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
যদি জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হয়, তবে আপনার শিশুর জন্মের সময় ওজন বেশি হতে পারে, যা প্রসব প্রক্রিয়া জটিল করে তুলতে পারে। এছাড়া, ভবিষ্যতে আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
আপনি চাইলে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন আমাদের ডায়াবেটিস বিষয়ক কেন্দ্রে (topic center)।
এছাড়া, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অন্যান্য মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করাও উপকারী হতে পারে। আমাদের বিনামূল্যের T2D Healthline অ্যাপে আপনি টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রকৃত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। প্রশ্ন করুন, পরামর্শ দিন এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন।